নব জাগরণ

নব জাগরণ

নব জাগরণ

নব জাগরণ

মোঃ মোস্তফা কামাল (কাকুল)

স্মৃতির পাতায় সবকিছু দেখা যায় না সময়ের কারণে কিছু জিনিস দেখতে হয় কল্পনায়। তেমনই বরুন গ্রামের অনেক মহৎ কর্মের ইতিহার আছে যে গুলো কল্পনায় নিতে হবে আমাদের আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের। গ্রামের নামের ইতিহাস কিংবা এর আদিঅন্ত আমার জানা নাই বা কল্পনাও করতে পারছি না। তবে গ্রামের উন্নয়নে যাদের ভূমিকা ছিল কিংবা আছে তা কল্পনায় আসে এবং ভাবনায় বিভিন্ন  সময়ে মগ্ন হয়ে যাই। পূর্ব পূরুষের কর্মকে অস্বীকার করা যায় না। তাদের কর্মে আমাদের জীবনের সৃষ্টি। আমাদের কর্মে পরবর্তী প্রজন্ম এভাবে মনে হয় জন্মজন্মান্তর যুগের পর যুগ মানুষের বেঁচে থাকা। তাই অতীত জেনে ইতিহাস বুঝে জীবনের সঠিক পথ অবলম্বন করা বাঞ্চনিয়। গ্রামের এতো উন্নয়ন বর্তমানে যা আমরা ভোগ করছি এর কিছু ইতিহাস এবং যাদের অবদান আছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞা স্বীকার করা আমাদের উচিত। আমার জন্ম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক পরে। তাই যুদ্ধপরবর্তী একটি দেশে অবস্থা কি হয় বা হতে পারে তা শুধু মাত্র কল্পনা করা সম্ভব বাস্তবে দেখা সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে যখন থেকে কিছু কিছু বুঝতে শিখা শুরু করলাম সেই থেকে জাগরণী সংঘ, বরুন এর একটি মাটির ঘর দেখতে দেখতে বড় হতে থাকলাম। ধীরে ধীরে এই সামাজিক সংঘটনের কর্মকান্ড দেখতে দেখতে কখন কোন দিন ভর্তি হলাম মনে নেই। সংঘের সদস্য পদ   লাভ করা সময় আমরা কলেজে পড়ি। তখনও বড়দের সামনে বসে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে ওনাদের সভা গুলো দেখতাম, শুনতাম কিভাবে কি লিখতে হয় কি নিয়মে কি করতে হয় তা বুঝার মতো সামর্থ হয় নাই

তখনকার বয়যষ্ঠদের সাথে ধীরে ধীরে মিশতে শরু করলাম তাদের ব্যবহার এবং আদরগুলো অনেক অনুভব করি। হিন্দু মুসলিমের কোন ভেদাভেদ নাই  মিলে মিশে এক সাথে কাজ করে। আমরা যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র তখন উচ্চ বিদ্যালয়টি একটি মাটির ঘর অফিস কক্ষ যা আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে জড়ানো ছিল।  বর্তমান অডিটরিয়ামটি প্রাথমিক বিদ্যালয় উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ভাগ করা যায়। উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষগুলো ছিল বাঁশের বেড়া টিনের ছাউনি। বেড়াগুলোও ভাঙ্গ ছিল। এই ভাঙ্গ বেড়া কিংবা খুটিগুলো সংগ্রেহর দায়িত্ব পালন করত জাগরণী সংঘের শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত অশিক্ষিত যুবকগণ। বয়যষ্ঠ কমিটির লোকজনের নির্দেশ পেয়ে সংঘের সদস্যগণ বিভিন্ন  সরকারী ভূমি থেকে সংগ্রহ করত গজারীর খুঁটি। তখনকার সময় কোন ব্যানগাড়ী ছিল না কিংবা ব্যানগাড়ী চলার মতো কোন রাস্তা ছিল না। সবায় কাঁদে করে এত বড় বড় খুটি বহন করে নিয়ে আসতো। এখনও এগুলো স্মৃতির পাতায় ভাসে। সংঘের যুবকদের বিনা স্বার্থে এত কষ্টসাধ্য কাজ আজকাল আমরা কল্পনাও করি না।

সময়ের ব্যবধানে বরুন গ্রাম আজ অনেক উন্নত। গ্রামের উন্নয়নের অবতার দ্বারাই অনেক কিছু উন্নয়ন হয়েছে। অল্প সময়ে এত কিছুর উন্নয়ন হয়েছে যেন বর্তমান প্রজন্ম সবুজ শ্যামল এই গ্রামের মানুষ কখনও অনাহারে রয়েছে কল্পনা করতে পারবে না। তাই মহাসুখের জীবন ভোগে বিলাসিতার সর্বচ্চো অনুভব নিতে গিয়ে সঠিক পথটি হারিয়ে ফেলে। হেলে দুলে মোটসাইকেল চালানো যেন এক প্রকার সখ। কোন কোন সময় এই সখ হয়ে যায় মরণ ফাঁদ। হেটে যাওয়া রাস্তাটুকু যেন গাড়ী ব্যবহার করলে ভালো লাগে। ফলে কোন শারীর পরিশ্রম সহ্য হয় না। দিনে দিনে শারীরিক সক্ষমতাও হারাতে বসেছে। এই সবের প্রভাব পড়ছে পারিবারিক ভাবে, নুতন নুতন নানা সমস্যা তৈরী হচ্ছে সমাধান করার পথ আমাদের খুঁজে নিতে হবে। বাহ্যিক উন্নয়ন ভোগ করলেও অন্তরনিহিত সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

জাগরণী সংঘ, বরুন গ্রামের মানুষের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। আমাদের সকল সদস্যদের উচিত সংঘের কার্যক্রমের গতিধারা অবহ্যত রাখার জন্য সময় উপযোগী সমস্যার সমাধান কল্পে কার্যক্রমের পথ পরিবর্তন করা। বর্তমান বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে মহানুভব প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্যদের সাথে সাথে সংঘেরও অনন্তিম সময় চলে আসবে। তাই বর্তমান প্রজন্মের উচিত সংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্য মনের মনিকোঠায় লালন করে পূর্বপূরুষদের প্রতিষ্ঠিত এই সংঘকে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সাথে মিলিয়ে দেওয়া, যাতে গতিময় জীবনের সঠিক পথটির সাথে তাল মিলিয়ে সংঘটি হাজার প্রজন্মের জীবন উজ্জল করতে সক্ষম হয়। বর্তমান প্রজন্মের কাজ পরবর্তী  প্রজন্মের কাছে সময় উপযোগী করে তুলে দেয়া পরবর্তী প্রজন্ম তখনকার সময় উপযোগী করে দিতে সক্ষম হবে।

আমার সংঘের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পর প্রতিটি সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হয়েছে। ২০০৮-২০১০ মেয়াদে শ্রদ্ধেয় জনাব সারফুদ্দিন সরকাররের সভাপত্তিতে আমি সাংগঠনিক কার্যক্রম পালন করার দায়িত্বে নিয়োজিত হই। তখন সভাপতির দক্ষতায় ইচ্ছায় সমস্ত সদস্য তালিকা অন্যান্য কাগজপত্রগুলো কম্পিউটারের কম্পোজ করতে সক্ষম হই। পরবর্তীতে আবার ২০১২-২০১৪ মেয়াদে জনাব মাসুদ আলম মোড়লকে সভাপতি করে আমি সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ত পালন করি। চেষ্ঠা করি নুতন করে সংঘটিকে সার্বিক দিক জাগিয়ে তুলতে। সার্বিক দিকগুলো তুলে আনতে আমাদের মেয়াদের অন্তিমতা চলে আসে। পরবর্তী কমিটিগুলো অনেক প্রচেষ্ঠা চালায় সংঘটি প্রবাহমান রাখতে। যারা এই কমিটিগুলো সম্পৃক্ত থেকে কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সমগ্রবিশ্বে বিপর্যয়ের প্রভাব আমাদের সংঘেও বিস্তার করে ফলে সৃষ্টি হয় সাময়িক জটিলতা। এই সময়ে হাল ধরেছে আমাদের গ্রামের কান্ডারীবৃন্দ যাদের অবদান আবারও আমাদের ঋণী করছে তুলছে। আমাদের প্রত্যেক সদস্যদের উচিত তাদের সার্বিক সহযোগীতা করা। আশা করি সকলের সার্বিক সহযোগীতায় গ্রামের পরম শ্রদ্ধেয় কান্ডারীদের সঠিক কার্যক্রমে জাগরণী সংঘ, বরুন আবার ফিরে পাবে নব জাগরণ


Post a Comment

0 Comments